ঢাকা, শনিবার ২০, ডিসেম্বর ২০২৫ ১৭:৪৫:২১ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
নির্বাচনের বাকি ৫৩ দিন, সামনের প্রতিটি দিনই গুরুত্বপূর্ণ! ‘সীমান্তে অতন্দ্র প্রহরীর দায়িত্ব পালন করছে বিজিবি’ ওসমান হাদির মৃত্যুতে রাষ্ট্রীয় শোক আজ ট্রাভেল পাস হাতে পেয়েছেন তারেক রহমান উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর অফিসে আগুন

গাজায় স্থলযুদ্ধ: ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা 

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৩:৫৩ পিএম, ২৮ অক্টোবর ২০২৩ শনিবার

সংগৃহীত ছবি

সংগৃহীত ছবি

গাজা অবরোধের তৃতীয় সপ্তাহে শনিবার ভোরে ইসরায়েল ফিলিস্তিনি ভূখন্ডের যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করে তুমুল স্থল অভিযান শুরু করেছে।  
জাতিসংঘ সতর্ক করে বলেছে, এটি হবে গাজা উপত্যাকার অভ্যন্তরে  ‘অভূতপূর্ব মানব মহাবিপর্যয়’। কয়েক সপ্তাহ ধরে অবিরাম বোমা হামলার পর গাজার ভেতরে মানব বিপর্যয়ে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে গাজাবাসীকে। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে অবিলম্বে মানবিক যুদ্ধ বিরতি প্রস্তাব পাস হওয়া সত্ত্বেও এই স্থল অভিযান তা মহাবিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দেবে। 
হামাসের সশস্ত্র শাখা এজেদিন আল-কাসাম ব্রিগেড এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘আমরা বেইত হ্যানউনে (উত্তর গাজা স্ট্রিপ) এবং পূর্ব বুরেজ (কেন্দ্রে) ইসরায়েলি স্থল অনুপ্রবেশের মোকাবিলা করছি। এখানে পাল্টাপাল্টি স্থল যুদ্ধ সংঘটিত হচ্ছে।’ 
ইসরায়েলের সামরিক মুখপাত্র মেজর নির দিনার এএফপি’কে বলেছেন, ‘আমাদের সেনারা গতকালের মতোই গাজার অভ্যন্তরে কাজ করছে।’
হাজার হাজার সৈন্য নিয়ে গাজা সীমান্তে ইসরায়েলি বাহিনী চূড়ান্ত স্থল অভিযানের জন্য প্রস্তুত রয়েছে। এর আগে ইসরায়েলি বাহিনী বুধবার এবং বৃহস্পতিবার রাতে সীমিত স্থল অভিযান চালিয়েছে। 
সামরিক মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি শুক্রবার সাংবাদিকদের জানান,
‘গত দিনের সিরিজের স্ট্রাইক অনুসরণ করে, স্থল বাহিনীর অভিযান 
আজ রাতে বাড়ানো হচ্ছে।’ 
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী আরও বলেছে, তারা কৌশলগত উপায়ে ‘তাদের বিমান হামলা আরো বাড়িয়েছে।’
ইজেদিন আল-কাসাম ব্রিগেড টেলিগ্রামে বলেছে, অব্যাহত রকেট হামলার মাধ্যমে ইসরায়েলি স্থল অভিযানের প্রতিরোধ করছে।
শুক্রবার গভীর রাতে এএফপি’র লাইভ ফুটেজে দেখা গেছে, বিমান হামলার পর উত্তর গাজার রাতের আকাশে উজ্জ্বল আলোর ঝলকানি দেখা যায়, কালো ধোঁয়ার মেঘে দিগন্ত ঢেকে যাচ্ছে।  
তাল আল-হাওয়া আশপাশের একটি বোমা বিধ্বস্ত রাস্তায় ৫০ বছর বয়সী ওম ওয়ালিদ বাসাল জিজ্ঞাসা করলেন, কেন তার অ্যাপার্টমেন্ট ব্লকে ইসরায়েল বোমা হামলা করেছে?
তিনি বলেন, ‘এটি আমাদের বাড়ি, আমরা এখানে শুধু আমাদের বাচ্চাদের সাথে থাকতাম, এটি শিশুদের আনাগোনায় পূর্ণ ছিল।’
তিনি বলেন, ‘কেন তারা আমাদের উপর বোমা বর্ষণ করছে? কেন তারা আমাদের ঘরবাড়ি ধ্বংস করছে?’
হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় শুক্রবার বলেছে, ইসরায়েল গাজায় হামলা চালিয়ে এই পর্যন্ত ৭,৩২৬ জনকে হত্যা করেছে। এরমধ্যে ৩,০০০ এরও বেশি নারীও শিশু।
হামাস এর আগে বলেছিল যে, তারা আক্রমণের মোকবেলার জন্য ‘প্রস্তুত’।
হামাসের রাজনৈতিক একজন সিনিয়র সদস্য ইজ্জাত আল-রিশাক টেলিগ্রামে বলেন, ‘যদি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু আজ রাতে গাজায় প্রবেশের সিদ্ধান্ত নেন, তাহলে তা প্রতিরোধ প্রস্তুত।’ 
তিনি বলেন, ‘নেতানিয়াহুর সৈন্যদের অবশিষ্টাংশ গাজার ভূমি দখল করবে।’
হামাস বলেছে, গাজা জুড়ে সমস্ত ইন্টারনেট সংযোগ এবং যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন এবং ইসরায়েল আকাশ, স্থল ও সমুদ্র থেকে রক্তক্ষয়ী প্রতিশোধমূলক হামলার মাধ্যমে ‘নির্বিচার হত্যাকান্ড ঘটাতে’ ইন্টারনেট সংযোগ এবং যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে আকাশ, স্থল ও সমুদ্র থেকে রক্তক্ষয়ী প্রতিশোধমূলক হামলা মাধ্যমে।’
হিউম্যান রাইটস ওয়াচও সতর্ক করেছে যে, টেলিযোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করার মাধ্যমে গাজায় ব্ল্যাকআউট ঝুঁকি ‘গণ নৃশংসতা’ আড়াল করার প্রচেষ্টা চালানো হতে পারে। 
এদিকে ফিলিস্তিন রেড ক্রিসেন্ট জানিয়েছে,অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা দেওয়া ব্যাহত হয়েছে। 
অধিকৃত ফিলিস্তিনিদের জন্য জাতিসংঘের মানবিক সমন্বয়কারী লিন হেস্টিংস বলেন,  ‘গাজা উপত্যাকার অপারেশন রুমের সাথে আমাদের যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে এবং আমাদের সমস্ত দল সেখানে কাজ করছে।’ 
লিন বলেন, গাজা থেকে বাইরের বিশ্বের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। তিনি সতর্ক করে বলেন, যোগাযোগ ছাড়া ‘হাসপাতাল ও মানবিক কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া যাবে না।’
শুক্রবার গাজায় একটি ‘তাৎক্ষণিক মানবিক যুদ্ধবিরতি’ এর জন্য জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের আহ্বানের পর স্থল যুদ্ধের এই খবর আসে।
নন-বাইন্ডিং প্রস্তাবটি অপ্রতিরোধ্য সমর্থন পেয়েছে এবং যুদ্ধ বিরতির প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছে হামাস।
কিন্তু এই প্রস্তাবের কঠোর সমালোচনা করেছে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রে। 
ইসরায়েলের বোমাবর্ষণে জনাকীর্ণ গাজায় ১৪ লাখের ও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। এমনকি গাজায় খাদ্য, পানি ও বিদ্যুতের সরবরাহ পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
হামাস অস্ত্র ও বিস্ফোরক তৈরি করবে এই অজুহাতে ইসরায়েল সমস্ত জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে। 
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস সতর্ক করে দিয়েছিলেন যে, স্থল হামলায় প্রতি মিনিটে দুর্দশা ‘বাড়ছে’।
গুতেরেস বলেছেন, ‘আমি একটি মানবিক যুদ্ধবিরতির জন্য আমার আহ্বানের পুনরাবৃত্তি করছি। এর সমস্ত জিম্মিদের নিঃশর্ত মুক্তি এবং জীবন রক্ষাকারী সরবরাহ অব্যাহত রাখার আহবান জানাচ্ছি।’